ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন ২০২৪
সিলেট বিভাগের ১১ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ৮ মে
- প্রকাশ: ১১:২২:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪
- / ১০৭ বার পড়া হয়েছে
সিলেট বিভাগের ১১ উপজেলাসহ দেশের ১৫২ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন আগামী ৮ মে বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। এ সকল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ১৫ এপ্রিল সোমবার। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের এই তফসিল ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, এবারও দলীয় প্রতীকেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও নির্বাচন করতে পারবেন। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ২২ উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে ভোট হবে এবং বাকিগুলোয় নির্বাচন হবে ব্যালট পেপারে। আগামী ৮, ২৩ ও ২৯ মে এবং ৫ জুন মোট চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানত বহু গুন বাড়ানো হয়েছে। পঞ্চমবারের গেল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দি¦তাকারী প্রার্থীর জামানত ১০ হাজার থেকে বৃদ্ধি করে এবার সেটি এক লাখ টাকা করা হয়। একইভাবে গেলবার ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দি¦তাকারী প্রার্থীর জামানত ৫ হাজার টাকা থাকলেও এবার সেটি বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এবার প্রার্থীরা সরাসরি কিংবা অনলাইনে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ ১৭ এপ্রিল বুধবার। রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের তারিখ ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তির তারিখ ২১ এপ্রিল রোববার। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ এপ্রিল সোমবার। আর ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।
ছাপানো যাবে রঙিন পোস্টার-ব্যানার প্রার্থীর জামানত বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ গুন
সিলেট বিভাগের ১১ উপজেলায় ভোট হবে ব্যালট পেপারে। এবার প্রথম ধাপে সিলেট জেলার মধ্যে সিলেট সদর উপজেলা, বিশ্বনাথ উপজেলা, গোলাপগঞ্জ উপজেলা ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলা ও শাল্লা উপজেলা, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলা, কুলাউড়া উপজেলা ও বড়লেখা উপজেলা এবং হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সংশোধিত নির্বাচন পরিচালনা বিধি ও আচরণ বিধি অনুযায়ী, এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে কোনো সমর্থন সূচক তালিকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রার্থীরা সাদাকালো পোস্টার ও ব্যানারের পাশাপাশি রঙিন পোস্টার ও ব্যানার করতে পারবেন। এবারই প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণার সময়ও বেশি পাচ্ছেন। প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রার্থীরা জনসংযোগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালাতে পারবেন। এছাড়া নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত ও পুনরায় ভোটের নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে বিধিমালায় ইসির ক্ষমতাও স্পষ্ট করা হয়েছে।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দলীয়ভাবে হলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে এবার কোনো প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বলে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তবে, রাজনৈতিক দল সমূহের নেতাদের মধ্যে প্রার্থী হওয়া নিয়ে বেশ তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াত সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায় তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। মাঠে সরব আছে উপজেলা পদ্ধতি চালুর জনক এরশাদের জাতীয় পার্টিও। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মাঝেও উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা মাঠে সরব রয়েছেন। সরব রয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
জানা গেছে, দেশে ১৯৮৫ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উপজেলা পরিষদ পদ্ধতি চালু করেন। উপজেলা পরিষদ হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে একদিনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন ছয়টি ধাপে ও ২০১৯ সালে পাঁচ ধাপে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের ভোট হয়। আগের চারটি উপজেলা নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হলেও আইন সংশোধন হওয়ায় ২০১৭ সালের মার্চে মেয়াদোত্তীর্ণ তিনটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন দলীয় প্রতীকেই হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে সরাসরি দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।